কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো?
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো:বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো, ইউটিউব বর্তমানে অনেকেই ইউটিউব ব্যবহার করে নানা ধরনের কাজ করে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা কিভাবে একটি প্রফ্রেসনাল ইউটিউব খুলতে হয় সেটা জানে না। তাই আজকের এই পোস্ট আমরা জানবো, কিভাবে প্রফেশনাল মানের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয়।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলবো
এটি একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে, মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকে। বর্তমানে এটি ছাড়া চলা একেবারে অসম্ভব, প্রায় সকলেই এখন ইউটিউবে দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করে থাকেন। এই প্লাটফর্মটি ২০০৫ সালে গঠিত হয় বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২০০ কোটির অধিক ব্যবহারকারী সক্রিয়ভাবে ইউটিউব ব্যবহার করছে। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যম এ প্ল্যাটফর্মটি থেকে মাসে শত শত ডলার আয় করছে। এখান থেকে কিছু অর্থ ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কনটেন্টদেরকে ভাগ করে দিয়ে থাকেন যার কারণে এটি বর্তমানে জনপ্রিয় আয়ের মাধ্যম হিসেবে সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার উপায়
অনেকে মনে যে মনে করে যে ইউটুবে ভালো মানের একটি ল্যাপটপের থাকা লাগবে এটি একেবারেই ভুল, ইউটিউব চ্যানেল মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি পার্সোনাল চ্যানেল আরেকটি হচ্ছে ব্র্যান্ড চ্যানেল। পার্সোনাল চ্যানেলগুলো মূলত একজন ব্যক্তি ধারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকেন এবং অন্যদিকে ব্র্যান্ড চ্যানেলগুলো কেবলমাত্র কোন প্রতিষ্ঠান বা টিম এর অধীনে নিয়ন্ত্র হয়ে থাকে। ফলে পার্সোনাল চ্যানেলগুলো থেকে ব্র্যান্ড চ্যানেল গুলো দেখতে বেশি প্রফেশনাল হয়ে থাকে, তাই প্রফেশনাল ব্র্যান্ডের একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলাই ভালো। ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রথমত ল্যাপটপ অথবা মোবাইল থাকলেও চলবে এবং একটি ভেরিফাইড জিমেইল অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব অ্যাপস ও ইন্টারনেট সংযোগ। এই জিনিসগুলো থাকলেই যে কেউ চাইলে প্রফেশনাল মানের ইউটিউব চ্যানেল সহজে খুলতে পারবেন।
কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন
উপরে ইউটিউব এর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার পরও এখন চলুন কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। যেহেতু আমরা জেনেছি কিভাবে ইউটিউব দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায় সে বিষয়ে পর্যক্ত তথ্য ইতিমধ্যে তুলে ধরা হয়েছে, যেহেতু এটি অর্থ উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হওয়াই যে কেও চাইলে এটি খুলতে পারবেন। ইউটিউব কেন খোলার জন্য বেশ কিছু ধার প্রয়োজন নিচে তা আলোচনা করা হলো হলো
প্রথম ধাপ :ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রথমত আপনাকে একটি ভেরিফাইড জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। কারণ ইউটিউব হল গুগলের একটি প্রতিষ্ঠান তাই অবশ্যই আপনার প্রথম কাজ হল একটি জিমেইল একাউন্ট খোলা তারপর আপনি ওই অ্যাকাউন্টটি দিয়ে ইউটিউব এ চ্যানেল তৈরী করতে পারবেন।
দ্বিতীয় ধাপ:ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রথমত আপনাকে তাদের ওয়েবসাইটে যেতে হবে, এই ক্ষেত্রে আপনার জিমেইল একাউন্টটি যদি আগেই লগইন করা থাকে তাহলে সরাসরি ইউটিউবে লগইন করতে পারবেন। আর যদি জিমেইল একাউন্ট টি লগইন করা না থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনার একাউন্টটি সাইন ইন অপশনে গিয়ে সাইন ইন করে নিতে হবে। তারপর জিমেইল এ পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউবে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর আপনার সামনে ইউটিউব এ ড্যাশবোর্ড শো করবে, ওখান থেকে সেটিং অপশনে গিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ শুরু করবেন। ওখানে তিনটি অপশন দেখতে পারবেন অপসাশন গুলো হলো :
#Channel Status and Features
#Create a New Channel
#View Advanced Settings
এই তিনটি অপশনের মধ্য থেকে Create a New Channel এই অপশন টিতে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার চ্যানেলের নাম দিতে হবে এবং আপনি চ্যানেলটি তৈরি হয়ে যাবে। চ্যানেলের নাম দেওয়ার অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে হ্যান্ডেল মার অ্যাভেলেবল আছে কিনা যদি নাম থাকে তাহলে হ্যান্ডেলের পাশে সবুজ রঙের টিক চিহ্ন থাকবে।
তৃতীয় ধাপ:তৃতীয় ধাপ এর কাজ হলো চ্যানেল টি কে কাস্টমাইজ করা,আপনি চাইলে Layout গিয়ে Basic Customization করতে পারেন।
*Channel trailer for people who haven’t subscribed :যারা চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেনি তাদের জন্য একটি সুন্দর ভিডিও সেট করতে পারেন, এবং তাদের সদস্য বানাতে পারেন।
*Featured video for returning subscribers :যারা চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন তাদের জন্য সুন্দর ভিডিও সেট করতে পারেন,তাদের চাইলে আপনি আপনাকে চ্যানেল এ আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
*Recommendation for your viewers এ For You:অপশনটি অন রাখলে চ্যানেলের জন্য ভালো হবে,এতে করে আপনার প্যান ফলোয়ার বৃদ্ধি পাবে।
চতুর্থ ধাপ :চতুর্থ ধাপ হলো Branding ইউটিউব চ্যানেলের কাস্টমাইজেশন এর ক্ষেত্রে ব্রেন্ডিং হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, আপনাদের ইউটিউব চ্যানেলের থাম্বেল, benner ,logo ও image ইত্যাদি বিষয় এড করতে পারেন।
পঞ্চম ধাপ :basic info অপশনটি ক্লিক করে ওখানে নাম হ্যান্ডেল এবং ডেসক্রিপশন ও ট্যাগ ইত্যাদি থাকবে থাকবে এগুলো কি ঠিকমতো করা, যেমন name, handle ,description teg এই অপসাশন গুলো থাকবে উদাহরণ:
*name : আপনি চাইলে নাম পরিবর্তন বা পরবর্তী সিটিংগুলো সুন্দরভাবে ঠিক করতে পারবেন।
*handle :এটির মাধ্যমে আপনার চ্যানেলের নাম কিংবা টাইটেল সুন্দরভাবে সেটআপ করতে পারবেন।
*description :ডেসক্রিপশন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সুন্দর একটি ডেসক্রিপশন এর মাধ্যমে আপনি আপনার চ্যানেলটিকে সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারবেন।
*teg :ডেসক্রিপশন পাশাপাশি ট্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এর মাধ্যমে বিভিন্ন কন্টেন্ট ভিডিওগুলো বিভিন্ন অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছে থাকেন।
*Channel এর Destination :Channel Destination এটি হলো সরভো শেষ ধাপ,বিশেষ করে Destination এ দুটি সেটিং হলো একটি লিঙ্ক,আর অন্যটি হলো কন্টাক্ট ইনফো, লিংকগুলো আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাথে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার যে কোন একটি লিংক আপনি যুক্ত করতে পারবেন, এতে করে youtube এর যে ফ্যান ফলোয়ার হবে ওরা আপনার সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতেও ভিসিট করবে এতে করে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্যান ফ্লাওয়ার ও বেড়ে যাবে। আর বেসিক ইনফো তে আপনার জিমেইল আইডি এড করতে পারবেন, এতে করে সাবস্ক্রাইবার এবং বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আপনার যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়
youtube এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা সম্ভব,যদি ভালো মানের ভিডিও আপলোড করতে যায়। অবশ্যই ইনকাম করার আগে বেশ কিছু মাধ্যম রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করার মাধ্যমে একজন youtuber তার গন্তব্যে পোঁছাতে পারে। youtube থেকে আয়ের বেশ কিছু মাধ্যম রয়েছেনিচে তা আলোচনা করা হলো।
১)বিজ্ঞাপন:ইউটিউব থেকে আয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে হল বিজ্ঞাপন, কেননা বিভিন্ন youtuber তাদের ভিডিও পাবলিশ পড়ে থাকে এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ওই ভিডিওগুলোতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন শো করায়। এই বিজ্ঞাপন শো মাধ্যমে বিভিন্ন youtuber তাদের ভিডিওর মান অনুযায়ী পেমেন্ট পেয়ে থাকেন।
২)অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে ইনকাম:সাধারণত বিজ্ঞাপন থেকে যে ইনকাম টি আসবে সেটি অনেক কন্টিন ক্রিটোরদেড় কাছে কম হতে পারে, তাই তারা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তিতে যেতে পারে এবং ওই কোম্পানির লিংক গুলোকে তাদের ভিডিও ডেসক্রিপশনে দিয়ে রাখতে পারেন। যাতে করে কোম্পানির পণ্য মার্কেটিং এর দায়িত্ব নিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি কমিশন আপনি পেয়ে যাবেন যা কোম্পানির লাভের অংশ থেকে বিবিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন youtuber কে দিয়ে থাকেন।
৩)ডোনেশন এর মাধ্যমে আয়:ইউটিউব থেকে আরেকটা মাধ্যম হলো ডোনেশন, এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেলে থাকা বিভিন্ন ফ্যান ফলোয়াররা তাদের নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে ডোনেট করে থাকে, এটি হচ্ছে প্যাট্রেয়ন নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি হয়ে থাকে।বর্তমান সময়ে চ্যানেলে মাধ্যমে ইউটিউব থেকে দ্রুত টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে না। কারণ আপনি যদি নতুন চ্যানেল খুলেন সে ক্ষেত্রে আপনার তেমন কোন অর্থ ইনকাম হবে না, কারণ আপনার ফ্যান চায় যে আপনি নতুন ভিডিও তৈরি করে যান, সে ক্ষেত্রে ওরা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ডোনেশনের প্রস্তাব দিয়ে থাকে , যাতে করে আপনি প্রতিদিন নতুন নতুন ভিডিও তৈরি করে তাদেরকে দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন।
৪)পণ্য বিক্রয় করে আয় করা:ইউটিউব থেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হল পণ্য বিক্রি করা, এখানে আপনি চাইলে আপনি নিজেই নিজের পণ্য মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার যতো বেশি ফ্যান হবে আপনার তত বেশি সেল হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি চ্যানেলে লোগো, দিয়ে টি-শার্ট, চাবির রিং, ব্যাগ, ইত্যাদি তৈরি করে সেটি আপনার ফ্রেন্ডের কাছে বিক্রি করতে পারেন এবং বিভিন্ন দেশেও অনেক বেশি প্রচার করতে পারেন।
৫)স্পন্সরশিপ :স্পন্সেরশিপ সকলেই কমবেশি এটির সঙ্গে পরিচিত, বিশেষ করে ইউটিউবারদের চ্যানেলে আগে থেকেই অধিক পরিমাণে ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে তাদের জন্য অধীক অর্থ আয়ে অন্যতম একটি মাধ্যম হলো স্পন্সেরশিপ। কাজ হলো বিভিন্ন কোম্পানিগণ তাদের পণ্য ভারত সেবা মার্কেটিং করার জন্য বিভিন্ন ইউটিউবারদেরকে হায়ার করে থাকেন এবং তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমানে একটি অর্থ দিয়ে থাকেন। এতে করে আপনার অর্থ উপার্জন হলো এবং কোম্পানিরও লাভ হয়ে গেলো।আবার কোন কোম্পানি আপনাকে এতো পরিমাণে টাকা দিবে যাতে করে আপনি এমনভাবে ভিডিও তৈরি করবেন যেখানে সেই কোম্পানির কথা উল্লেখ থাকবে এবং মানুষের চোখে পড়বে।
উপসংহার: পরিষদের জানতে পারলাম কিভাবে youtube চ্যানেল এবং এর ভিতরে খুঁটিনাটি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আজকে এই পোস্টের মধ্যে আমি তুলে ধরেছি। আমার এই পোস্টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না।