পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি?
পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি:পৃথিবীর ইতিহাসে বহু ধরনের ঘূর্ণিঝড় আমরা দেখেছি, তবে সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম আমরা অনেকেই এখনো জানিনা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংস ঘূর্ণিঝড়ের নাম গুলো কি।
পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি
বিশেষ করে আজ থেকে প্রায় পাঁচ দশক আগে আঘাত এনেছিল ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস যা কেড়ে নিয়েছিল প্রায় তিন থেকে পাঁচ লক্ষ মানুষের প্রাণ। সবকিছু মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল, তসনস করে দিয়েছিলো সব এলাকা। জাতিসংঘের আওতাধীন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) মতে ২০১৭ সালের ১৮ মে বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা প্রকাশ করেছেন। সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়এর তালিকা প্রকাশ করে। বিশেষ করে এটি বাংলাদেশের ভোলায় আঘাত হানা এই সামুদ্রিক ঝড়টি বিশ্বব্যাপী দ্য গ্রেট ভোলা সাইক্লোন নামে পরিচিত,এই ঝড়টি ১৯৭০ সালে ১২ই নভেম্বর আঘাত হানে যার ঘন্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২২৪কিলোমিটার। এটি উপকূলী এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করেছিলেন যার জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১০-৩৩ ফুট ছিল।
পৃথিবীর সবচাইতে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় গুলো কি কি
পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মানুষ এখনো ভুলতে পারে নি , আর এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে কোটি মানুষের প্রাণ। যার স্বজনরা আজও সে দিনগুলোর কথা বলতে পারে না, ধ্বংস করে দিয়েছে তাদের সব আশা ভরসা। এমন বেশ কয়েকটি প্রলয়ঙ্করী ঝড় নাম নিচে আলোচনা করা হলো:
**নার্গিস(২০০৮বাংলাদেশ ):দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের নাম হল নার্গিস এটি ২০০৮ সালের মে মাসে মায়ানমারে বড় ধরনের আঘাত হানে। যার ফলে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ এই ঝড়টির আঘাতের কারণে প্রাণ হারায়।
**দ্য গ্রেট বাকেরগঞ্জ সাইক্লোন(১৯৭৬বাংলাদেশ ):এটি ১৮৭৬ সালে অক্টোবর মাসে ভয়াবহ আঘাত হানে বরিশাল জেলা বাকেরগঞ্জে। সে সময় তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামূলক চলছিল ভয়াবহ ওই ঝড়ে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ২ লাখেরও বেশি মানুষ।
**ম্যারিয়েন ঘূর্ণিঝড়(১৯৯১বাংলাদেশ ):১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগে উপকূলীয় অঞ্চলের আঘাত আনে। টির ঘন্টায় গতিবেগ ছিল ২৫০কিলোমিটার, এটির ফলে ২০ ফুট উচ্চতার জলসার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছিল। প্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং বাস্তহারা হয়ে পড়ে এককোটির ও বেশি মানুষ।
**ভোলা সাইক্লোন(১৯৭০বাংলাদেশ ):সাধারণত বিশ্ব ইতিহাসের ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুযোগগুলোর মধ্যে ভয়াবহ অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হল ভোলার সাইক্লোন। এটি ১৯৭০ সালে ১৩ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উপর দিয়ে ঘন্টায় ২০৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত এনেছিল এবং সেই আঘাতের ফলে অন্তত পাঁচ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারায় এছাড়াও বেশিরভাগ মানুষ পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিলো।
**নিনা টাইফুন(১৯৭৫চীন):চীনে প্রতিবছরই আমরা কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখে থাকি। তবে তাদের প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থার কারণে তাদের ক্ষয়ক্ষতি তেমন একটা হয় না ফলে সেই দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে বিশেষ করে ১৯৭৫ সালে দেশটির হেনান প্রদেশে আঘাত এনেছিল নিনা টাইফুন। যেটির ভয়াবহতা প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ২ লক্ষ ৩১ হাজার মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১ কোটি ও বেশি মানুষ।
**হাইফোং টাইফুন(১৮৮১ভিয়েতনাম): ভিয়েতনামের হাইফোং শহরে ১৯৮১ সালে অক্টোবর মাসে তাইফুন আঘাত হানে। এটি প্রাকৃতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়, সেবার প্রায় তিন লক্ষ মানুষ প্রাণ হারায়।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা
আমরা প্রায় সময় দেখে থাকি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে থাকে। যার ফলে অধিকাংশ মানুষ মারা যায়, এবং তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। তবে যদি প্রাকৃতিক দুযোগের আগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলে ক্ষতি সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তাই নিচে বেশ কিছু পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ে তুলে ধরা হলো :
**ঝুঁকি মূল্যায়ন: বিশেষ করে একটি মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলো এবং সম্ভাব্য দুর্যোগপূর্ণ এলাগুলো চিহ্নিত করা হয়।
**প্রস্তুতি:প্রস্তুতির মাধ্যমে দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট আশ্রয় কেন্দ্রে চিহ্নিত করে, এবং ওই এলাকার মানুষগুলোকে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম সচেতন ও পূর্বপ্রস্তুতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
**সাড়াদান: দুর্যোগ সংঘটিত হলে, সতর্কতা জারি করা হয় এবং বিভিন্ন উদ্যার কার্যক্রম পরিচালনায় ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
**পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন:এটির কাজ হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মানুষগুলোকে অবকাঠামো, পণ্য নির্মাণ ও জীবিকা নির্বাহ, পূর্বাশন বেবস্তা করে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপুন্য উপদেশ দিয়ে থাকে।
**সকলের সম্পৃক্ততা:সকলের সম্পৃক্ততা, এটি মাধ্যমে বিশেষ করে সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি, স্থানীয় সরকারি, সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় দুর্যোগের খতিকে কমিয়ে আনা এবং সকলের চেষ্টায় দুর্যোগের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অনেকটাই সম্ভব হয়।
**সচেতনতা বৃদ্ধি:বিশেষ করে যারা উপকূলীয় অঞ্চলের বসবাস করে, তারা দুযোগ সম্পর্কিত কোন ধরনের তথ্য তাদের জানা থাকে না। তাই সে ক্ষেত্রে তাদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালা, সেমিনার, ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।
**নিয়মিত পর্যালোচনা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীগণ তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে দুযোগ্ এলাকায় মানুষগুলোকে নিয়মিত পর্যালোচনা করে থাকে।
পোস্ট টেগ :পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি,পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি,কোন ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়,বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় কোনটি,স্থলভাগের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি,ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি,বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি,ঘূর্ণিঝড় কি,সাইক্লোন কাকে বলে,ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা ,
উপসংহার :পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম এবং ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ববর্তী প্রস্তুতি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আজকের এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে। আমি আশা করি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর এই পোস্টের মধ্যে পেয়ে যাবেন। আমার এই পোস্টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।