ঘাসফড়িং এর ল্যাব্রাম মানুষের কোন অংশের সমতুল্য?
ঘাসফড়িং এর ল্যাব্রাম মানুষের কোন অংশের সমতুল্য: সাধারণত ঘাসে ঘাসে ঘুরে বেড়ায় বলে সকলেই এদেরকে ঘাসফড়িং নামে চীনে থাকে তবে ঘাস ফড়িং হলেও এদের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে এবং এরা ঘনত্বের উপর নির্ভর করে রঙ বদলে ফেলে এবং এরা যাঁকে যাঁকে ঘুরে বেড়ায়। আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো জানবো ঘাসফড়িং এর ল্যাব্রাম মানুষের কোন অংশের সমতুল্য।
ঘাসফড়িং এর ল্যাব্রাম মানুষের কোন অংশের সমতুল্য
মূলত ঘাসফড়িংকে এক শ্রেণি ইনসেক্টা শ্রেণীর পতঙ্গ বলা হবে, কারণ হলো এদের দেহের গঠন আর এদের মস্তিষ্ক, বক্ষ, তিন খন্ড বিশিষ্ট ও এদের তিনজোড়া সন্ধিযুক্ত পা, জটিল পুঞ্জাক্ষি এবং একজোড়া অ্যান্টেনা আছে। এদের দেহের রং সবুজ বা বাদামী রঙের হয়ে থাকে,কখনো কখনো এদের সংখ্যা এতো বেশি হয় যে এরা একসঙ্গে একটি খেতের সমস্ত ফসল খেয়ে সাবার করে ফেলতে পারে এগুলো দেশের শস্য ক্ষেতের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
ঘাসফড়িং এর শ্রেণিবিন্যাস
ঘাসফড়িং বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে, এর মধ্যে সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার ও বাংলাদেশের ২০ প্রজাতির ঘাসফড়িং এ পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে ২০ প্রজাতি পাওয়া যায় তার মধ্যে বিশেষ চার ধরনের ঘাসফড়িং উল্লেখ্য যোগ্য সেগুলো হলো :আর্কিডে এক্সাল্টাডা, ফ্লেইওবা ইনফুমেটা, কোরোইডোকাস্ রোবাস্টস্ জেনোকীট্যান্টপ্স, হিউমিলিস্।
ঘাস ফড়িং এর বসবাস
সাধারণত আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস ফড়িং দেখা যায়, যেহেতু ঘাস ফড়িং ঘাস ও লতা পাতা পছন্দ করে তাই তারা নিচু জায়গাতেই বসবাস করতে বেশ আনন্দ বোধ করে। তবে জলাভূমিতে এদের তেমন একটা বসবাস করতে দেখা যায় না মূলত যেসব জায়গায় পানি উঠা নামা করে কেবল ঐ সকল জায়গায় এরা ডিম পাড়ে। বিশেষ করে স্বাদুপানির ও ম্যানগ্রোভ জলাশয় পানি বেশিরভাগ উঠানামা করে সে ক্ষেত্রে ঘাসফড়ি যে ডিম পারে পানি উঠানোর কারণে প্লাবিত হয়ে যায় এই কারণে ঐ সব সকল জায়গায় এরা কম বাস করে।
ঘাসফড়িং এর খাবার
ঘাসফড়িং একটি তৃণভোজী প্রাণী এরা জন্মের পর থেকেই আশপাশের বিভিন্ন লতা পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে। তবে দু একবার এদের শরীরের খোলস পরিবর্তন করার পর এরা শক্ত উদ্ভিক গ্রহণ করতে পারে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এরা সব ধরনের লতা পাতা খেতে পারে। অধিকাংশ ঘাসফড়িংই উদ্ভিদ থেকে তাদের খাবার গ্রহণ করে থাকে, তবে দুই একটি প্রজাতি সুনির্দিষ্ট উদ্ভিদ থেকে তারা খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।
ঘাসফড়িং-এর বাহ্যিক গঠন
ঘাসফড়িং এর দেহ লম্বাটে এবং খন্ডায়িত এবংদ্বিপার্শীয় প্রতিসম হয়ে থাকে। এরা লম্বায় ৮ থেকে ৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে, এদের শরীল এর রং অনেকটাই হলদে ও সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এছাড়াও বাদামী রঙেরও ঘাসফড়িং মাঝেমধ্যে দেখা যায়। ঘাস ফড়িং এর দেহ অনেকটাই কিউটিকল নামক বহি কঙ্কাল ধারা আবৃত। এদের প্রতিটি দেহ পূর্ব ও শক্ত পাতের মতো গঠন সৃষ্টি করে থাকে এদের দেহে দুটি রাইতের মধ্যবর্তী তৌসি পাতলা ও নরম আকারে হয়ে থাকে এদেরকে সুচার বলে।
মেসেন্টেরন বা মধ্য পরিপাকনালি বা পাকস্থলি
বিশেষ করে এদের শরীরের মেসেন্টেরন গিজার্ডের এর পর থেকে শুরু করে এদের পাকস্থলী পর্যন্ত বিস্তৃতি থাকে। যা অন্তত কিউটিকলের পরিবর্তে পেরিট্রফিক পর্দা এর পরিবর্তে পদ্ধতি স্থলে 6 জোড়া পা ও লম্বা ও মোচাকৃতির থলেই থাকে যা সিকা নামে পরিচিত, যা খাদ্য তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এদের শরীরের শেষভাগে সুক্ষ চুলের মত অধিক সংখ্যক সবুজ বর্ণে হলদে অঙ্গাণু থাকে যা মালপিজিয়ান নালিকা বলে,এগুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে খাদ্য সরবরাহের কাজ করে থাকে।
ঘাসফড়িং এর মস্তক কি ধরনের
সাধারণত ঘাসফড়িং এর মস্তক এক ধরনের হাইপোগন্যাথাস বিশেষ, এই ধরনের মস্তককে মুখের অংশ মাথার নিচের দিকে অবস্থিত থাকে। যা তার শরীরের অধিকাংশই জুড়ে থাকে, এই ঘাসফড়িং এর মস্তকের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:
#পুঞ্জাক্ষি :এই ধরনের ঘাসফড়িং বড় আকারের হয়ে থাকে, এদের রয়েছে বড় দুটো বহুমুখী চোখ যা মস্তকের বেশিরভাগ জুড়ে আবিত্ত থাকে।
#ওসেলি :ওযসেলি ঘাসফড়িং এর বৈশিষ্ট্য হলো এদের মস্তকের উপরে অংশে তিনটি ছোট সরল চোখ থাকে।
#অ্যান্টেনা :এই ধরনের ঘাসফড়িং এর দীর্ঘ দুটির স্পর্শক শুঙ্গ থাকে,যা এর মস্তিষ্কে সামনের দিকে অবস্থিত।
ঘাস ফড়িংয়ের চোখের বৈশিষ্ট্য
ঘাস ফড়িং এর চোখ তাদের মাথার দুপাশে অবস্থিত, যা সংযুক্ত চোখ নামে পরিচিত। যা অনেকটাই ছোট ছোট চোখের সমাহার যা একসাথে জোড়া লাগানো এদের চোখের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে নিচিতা আলোচনা করা হলো:
#সংখ্যা:এদের মাথা দুপাশে সংযুক্ত দুটি করে চোখ থাকে।
#আকার:এদের সংযুক্ত চোখগুলো বেশ বড় আকারে হয়ে থাকে,যা মাথার বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
#দৃষ্টি: এদের সংযুক্ত বৃষ্টির মাধ্যমে এরা চারপাশের পরিবেশকে ভালোভাবে দেখতে পারে তবে মানুষের তুলনায় এদের চোখের দৃষ্টিশক্তি কম ও তীক্ষ্ণ হয়।
#পরিবর্তনশীল ফোকাস:ঘাস ফড়িং সংযুক্ত চোখের মাধ্যমে দ্রুত ফোকাস পরিবর্তন করতে পারে, যা তাদের কাছে এবং দূরবর্তী গুরুত্বকে স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে থাকে।
#চলন: ঘাসফড়িংয়ের চোখ গুলো তাদের ঘাড়ের মাঝখানে থাকে বিধায়, তারা সহজে স্বাধীনভাবে নোড়া চড়া করতে পারে যা তাদের চারপাশে পরিবেশে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে।
সাধারণত এদের চোখগুলোতে এক ধরনের বিশেষ ওসেল থাকে যা তাদের আলোর দিকে দিক নির্দেশনা করে। এছাড়াও এদের চোখ গুলিতে এক ধরনের বিশেষ পোলারাইজড আলো সনাক্ত করার ক্ষমতা থাকে যা সূর্যের অবস্থানকেও ট্র্যাক করতে সহায়তা করে থাকে।
প্রশ্ন উত্তর পর্ব: নিচে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হয়েছে?
১)ঘাসফড়িং এর পায়ের অংশ কি কি?
উত্তর :ঘাসফড়িং এর পায়ের অংশ গুলো হলো,কক্সা ,ট্রোচান্টার ,ফিমার,টিবিয়া ,টার্সাস,প্রিটার্সাস।
২)ঘাসফড়িং এর মস্তক কি ধরনের?
উত্তর :সাধারণত ঘাসফড়িং এর মস্তক এক ধরনের হাইপোগন্যাথাস বিশেষ, এই ধরনের মস্তককে মুখের অংশ মাথার নিচের দিকে অবস্থিত থাকে। যা তার শরীরের অধিকাংশই জুড়ে থাকে।
৩)ঘাসফড়িং-এর বাহ্যিক গঠন?
উত্তরঃ ঘাসফড়িং এর দেহ লম্বাটে এবং খন্ডায়িত এবংদ্বিপার্শীয় প্রতিসম হয়ে থাকে। এরা লম্বায় ৮ থেকে ৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে, এদের শরীল এর রং অনেকটাই হলদে ও সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এছাড়াও বাদামী রঙেরও ঘাসফড়িং মাঝেমধ্যে দেখা যায়।
৪)ঘাসফড়িং এর শ্রেণিবিন্যাস?
উত্তরঃ ঘাসফড়িং বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে, এর মধ্যে সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার ও বাংলাদেশের ২০ প্রজাতির ঘাসফড়িং এ পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে ২০ প্রজাতি পাওয়া যায়।
পোস্ট ট্যাগ:ঘাসফড়িং এর পায়ের অংশ কি কি,ঘাসফড়িং এর চোখ,ঘাসফড়িং এর খাদ্য,ঘাসফড়িং এর মস্তক কি ধরনের,ঘাসফড়িং এর বাসস্থান,ঘাসফড়িং এর শ্রেণিবিন্যাস,ঘাসফড়িং এর বৈশিষ্ট্য
শেষ কথা: পরিশেষে ফড়িংয়ের প্রয়োজনীয় তথ্য আজকে এই পোস্টে আমি যতটুক পেরেছি তুলে ধরেছি, আমি আশা করি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর এই পোস্টের মধ্যে পেয়ে যাবেন। যদি আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না।